Welcome to the Progressive International

Sign up now to receive breaking news and important updates from struggles across the world.We protect your data and never send spam.

Statements

আমরা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে লোক দেখানো বিচারের নিন্দা জানাই এবং তার তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করছি।

পিআই কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ বর্তমানে লন্ডনে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে চলমান অবৈধ ও বিপজ্জনক প্রত্যর্পণ মামলা থেকে তাকে বেকসুর খালাসের সমর্থনে বিবৃতি প্রদান করেছেন।
আমরা জানি যে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আনীত মামলাটি কেবলমাত্র তার একার ভাগ্য নির্ধারণ করবে না। অ্যাসাঞ্জের মামলার ফলাফল যাই হোক, তা আমাদের সম্মিলিতদের প্রচেষ্টার ভার বহন করবে। আমরা যদি এখনই জেগে না উঠি, যদি আমরা অ্যাসাঞ্জের পক্ষে কথা বলার সাহস না যুগিয়ে উঠতে না পারি, তবে তাকে গুপ্তআদালতে প্রেরণ করা হবে এবং তাকে আজীবন কারাদন্ড ভোগ করতে হবে যতদিন না তার মৃত্যু হয়। আমরা এই সময়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। অ্যাসাঞ্জের পক্ষে আন্তর্জাতিক সংহতি অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

“যতবার আমরা অন্যায়ের মুখোমুখি হই এবং প্রতিবাদ না করে চুপ করে থাকি, ততবার আমরা নিজেদেরকে নিষ্ক্রিয় হওয়ার প্রশিক্ষণ দিই, এরই ফলশ্রুতিতে এক সময় আমরা নিজেদেরকে ও আমাদের প্রিয়জনকে রক্ষা করার সমস্ত ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি”।

-জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ একজন বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক, সম্পাদক, জনস্বার্থে তথ্য প্রকাশকারী এবং বুদ্ধিজীবী, যার পৃষ্ঠপোষকতা বৈশ্বিক ন্যায়বিচার প্রচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইউরোপের সার্বভৌম দেশগুলিতে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের সাংবাদিকতা কর্মকাণ্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দায়েরকৃত মামলা মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের চূড়ান্ত লঙ্ঘন। আরও বিপদজনক কথা হচ্ছে এর ফলে এমন একটি আইনি নজির স্থাপন করা হয়েছে যার অর্থ হল, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির সাথে ভিন্নমতপোষণকারী যে কাউকে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণ করা যাবে (অর্থাৎ প্রত্যর্পণ করা যাবে), যার ফলাফল- যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা এমনকি মৃত্যুদণ্ড। এই ধরণের মামলা বিশ্বব্যাপী বাকস্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রসমূহের জাতীয় সার্বভৌমত্বের জন্য স্পষ্ট হুমকি স্বরূপ।

২০০৭ সালে নাইরোবির বিশ্ব সামাজিক সম্মেলনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে উইকিলিকস তার সত্য ও ন্যায়বিচারের লড়াইয়ের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে চলমান সামাজিক আন্দোলনগুলোর অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করেছে। উইকিলিকসের সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে অ্যাসাঞ্জের কাজ আইসল্যান্ড থেকে নামিবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বিভিন্ন রাষ্ট্রের অর্থপাচার থেকে শুরু করে দূর্নীতিতে সরকারী অপকর্মের যে পরিমাণ তথ্য প্রকাশ করেছে, তা এই শতাব্দীর অন্য যে কোন সংবাদ গোষ্ঠীকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। মানবাধিকার রক্ষায় উইকিলিকসে তার কাজের জন্য বিশ্বব্যাপী অ্যাসাঞ্জ পুরষ্কৃত হয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক যখন উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অপরাধ প্রকাশ করতে শুরু করল- বিশেষ করে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ, গুয়ান্তানামো বেতে নির্যাতন এবং সিআইএ’র "ভল্ট ৭ (Vault 7)" এর মাধ্যমে সংগঠিত অবৈধ নজরদারি কার্যক্রমের নথি যখন ফাঁস হয়ে গেল, তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসাঞ্জকে অপরাধী এবং সন্ত্রাসী হিসাবে বিবেচনা করতে শুরু করল। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এখন কেবল ও কেবল মাত্র এই অভিযোগুলোর উপর ভিত্তি করে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা চালানো হচ্ছে।

আমরা বিশ্বাস করি যে, প্রত্যর্পনের বিরুদ্ধে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের পক্ষে সমর্থন বজায় রাখা বিশ্বজুড়ে প্রগতিশীল শক্তির জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। এই মামলার ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও সর্বত্র এ বিষয়ে এক বিস্ময়কর নীরবতা পালন করা হচ্ছে। তাই বিশ্বের সমস্ত প্রগতিশীল শক্তির দায়িত্ব এখনই এর বিরুদ্ধে সরব হওয়া । এসবের মাঝেই অ্যাসাঞ্জকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য তাঁকে প্রথমে অন্তরীণ করা হয় লন্ডনস্থ ইকুয়েডর দূতাবাসে। বর্তমানে তাঁকে রাখা হয়েছে বেলমার্শ কারাগারে, যেখানে তাঁকে প্রতিদিন ২৩ ঘন্টা নির্জনবাসে রাখা হয়। অ্যাসাঞ্জ হচ্ছেন ক্ষমতাসীনদের শক্তির অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের একজন স্বাধীন প্রতিনিধি। এই মুহূর্তে অ্যাসাঞ্জকে সমর্থন করতে ব্যর্থ হওয়া মানে পর্বতসমান কাপুরুষতার পরিচয় দেওয়া যা আমাদের নিজেদের জন্য এক নজিরবিহীন ক্ষতি।

আমরা যুক্তরাজ্য সরকারের লোক দেখা্নো বিচারের নিন্দা জানাই এবংতিনি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব।

সহজলভ্য
অনুবাদক
Mohammad Abdullah Arafat and Yasir Sarkar
তারিখ
24.09.2020
Navigated to আমরা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে লোক দেখানো বিচারের নিন্দা জানাই এবং তার তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করছি।